গাজীপুরের কালীগঞ্জে বেগম রাবেয়া আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজ-উ-দৌলা কে স্থায়ীভাবে অপসারণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। দুর্নীতিসহ নারী কেলেঙ্কারীরর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার (১০ ফেব্রæয়ারী) সকালে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্তরে মানববন্ধন কর্মসূচী শেষে ইউএনও বরাবর সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।
এর আগে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বেগম রাবেয়া আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজ-উ-দৌলা নারীলোভী দুর্নীতিবাজ একজন মানুষ। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকায় নিজের কতৃত্ব বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছেন। নিজের ইচ্ছামত যা খুশি তাই করেছেন। ২০১৭ সালে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে তার সম্ভ্রমহানীর চেষ্টা করলে মেয়েটি চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করলেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি পার পেয়ে যান।
গত বৃষ্পতিবার বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক আনুতোষ করের স্ত্রীর সঙ্গে একই কক্ষে স্থানীয়দের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েন। পরে তারা ওই শিক্ষককে পুলিশের কাছে দিলে তিনি কৌশলে বেড়িয়ে আসেন। এরই প্রেক্ষিতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।
বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মিতু বলেন, আমাদের সিনিয়র আপুদের সাথে তিনি যে আচরণ করেছেন তাতে আমরা নিজেরা আমাদের নিজেদের নিরাপত্তা শঙ্কিত। আমরা এতবড় অনিশ্চয়তার মধ্যে ক্লাশে, পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছিনা। আমরা তার মতো শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার চাই। যদি তাকে বিদ্যালয়ে বহাল রাখা হয় আমরা ক্লাশে যোগদান করবোনা, প্রয়োজনে বিদ্যালয় ত্যাগ করতে বাধ্য হবো।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মানষ গুণ বলেন, তিনি একাধিকবার নারী কেলেঙ্কারীর মতো জঘন্য কাজ করতে গিয়ে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েছেন। আ’লীগের সভাপতি হওয়ায় পার পেয়ে গেছেন বারবার। এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাকে আর ছাড় দেওয়া যাবেনা। বিদ্যালয়ের মান সম্মান অক্ষুণœ রাখতে তার মতো শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার ছাড়া দ্বীতিয় কোন উপায় দেখছিনা। আর এ জন্যই ইউএনও বরাবর আমাদের শিক্ষকদের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি জমা দিয়েছি।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তনিমা আফ্রাদ বলেন, আমি দুইটি স্মারকলিপি হাতে পেয়েছি। প্রধান শিক্ষকের ব্যপারে যে অভিযোগ এসেছে তা সত্যিই দুঃখজনক। আমি নিজেও একজন মেয়ে। সুতরাং বিদ্যালয়ের পরিবেশ যদি মেয়ে বান্ধব না হয় তাহলে মেয়ে শিক্ষার্থীর পরিমান দিনদিন কমে যাবে, এটা হতে দেওয়া যায়না। আমি বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইননাগুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।