চৈত্র ফিরেছে তার আপন চরিত্রে। শীত শীত ভাের শেষে সকালেই চোখ রাঙাচ্ছে সূর্য্যি মামা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বেড়ে চলেছে তাপের দাপট।
মধ্যদুপুরে বসন্তের বাতাস চোখে-মুখে লাগলে চৈত্রের তাপটা ভালোই টের পাওয়া যাচ্ছে। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে মন উদাস করা কোকিলের কুহুতান। ক্লান্ত পথিক খুঁজছে কোনো গাছের ছায়াশীতল আশ্রয়। তৃষ্ণান্ত পক্ষীকূল ব্যস্ত জলাশয়ের সন্ধানে।
ইতিমধ্যেই উত্তরের জেলা নওগাঁয় মৃদৃ তাপপ্রবাহ শুরু হয়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টায় বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে দিনের সর্বোচ্চ তাপামাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জেলার নিয়ামতপুর উপজেলায় বোরো ধানে সেচে পানির চাহিদা বেড়েছে। বরেন্দ্র অঞ্চলে বোরো ধানের সেচের প্রধান উৎস ভূগর্ভস্থ পানি। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এই পানির জোগান দেয়।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলায় একদিনেই প্রায় কোটি টাকার পানি বিক্রি করেছে বিএমডিএ। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিয়ামতপুর বিএমডিএ কর্তৃপক্ষের সহকারী কোষাধ্যক্ষ মাসুদ রানা। এদিন নিয়ামতপুর বিএমডিএ ভেন্ডিং ডিলার (প্রি-পেইড মিটারের কার্ড রিচার্জার) এর মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি বিক্রি করেছে ৯৪ লাখ ৩৫ হাজার ১২৫ টাকার।
জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে সেচ মোকাবেলা করতে নিয়ামতপুর উপজেলায় বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) ৬০৩টি গভীর নলকূপ চালু রয়েছে।
এসকল গভীর নলকূপের আওতায় এবার বোরোর আবাদ হয়েছে প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে। এসব জমিতে সেচের জন্য প্রতি ঘন্টায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন হচ্ছে হাজার-হাজার কিউসেক। ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নীচে নেমে যাচ্ছে দিনদিন। বিকল হয়ে পড়ছে বরেন্দ্র অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার হ্যান্ড টিউবয়েল। কৃষকেরা বলছেন, বোরো ধান মূলত সেচ নির্ভর ফসল। এই মৌসুমে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে।
তাই আমাদের সম্পূর্ণভাবে বিএমডিএর গভীর নলকূপের সেচের উপর নির্ভর করতে হয়।
বোরোর মাঠে সেচ সঙ্কট বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রকৌশলী হারুন অর রশীদ জানান, এখন পর্যন্ত সেচ সঙ্কট দেখা দেয়নি। তবে দেখা দিলে বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে তা সমাধান করা হবে।