জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দুর্নীতির অভিযোগে বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও তার স্ত্রী মাধবী চন্দ্র দেবনাথের নামে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুদকের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বুধবার এই মামলা দুটি করা হয়। এছাড়া প্রায় ২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ ও তার স্ত্রী কাপসিয়া তালুকদার, শম্ভুর মেয়ে শুল্কা দেবনাথ, মনীষা মুনমুনের সম্পদের বিবরণী চেয়ে নোটিশ জারি করেছে দুদক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ৪১ লাখ ২০ হাজার ১২৫ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। নিজ নামে ১৬টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৪১ কোটি ৯৩ লাখ ২৫ হাজার ৭০২ টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ছাড়াও ২৩টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রায় ৫০ কোটি টাকার অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অপরদিকে শম্ভুর স্ত্রী মাধবী দেবনাথ স্বামীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২ কোটি ২ লাখ ৪১ হাজার ৪০৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া সাতটি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে তিনি ৮ কোটি ৪৫ লাখ ৬১ হাজার ২৭৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এসব অভিযোগে শম্ভু ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে। এছাড়া শম্ভুর ছেলে ধীরেন্দ্র দেবনাথ, পুত্রবধূ ও দুই মেয়ের সম্পদ বিবরণী তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
সুনাম দেবনাথ ৯৬ লাখ ৫৮ হাজার ৪৪৩ টাকা ও কাসপিয়া ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪০০ টাকা সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ করে দুদক। শম্ভুর দুই মেয়ে শুক্লা দেবনাথের বিরুদ্ধে ৬৮ লাখ ৯১ হাজার টাকার এবং মনীষা মুনমুনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের সম্পদ বিবরণীর নোটিশও জারি করেছে দুদক।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রুহুল হক বলেন, ‘ওই দুজনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। তদন্তে আরও কিছু পেলে পরে জানানো হবে।’
এদিকে সাবেক এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ঢাকার একটি হত্যা মামলায় কারাগারে আছেন। এ ছাড়া তার স্ত্রী ও সন্তানদের ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।